নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ভূইগড় রূপায়ন গ্রুপের রূপায়ন টাউন আবাসিক এলাকায় ভাইস চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী নাজীম উদ্দিন বাহিনীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে রূপয়ান টাউন বাসী। আজ এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে কতৃপক্ষের পালিত সন্ত্রাসীরা ফ্ল্যাট কিনলে চাঁদা দাবী, ভুতুড়ে সার্ভিস চার্জ, পানির বিল, বিদ্যুৎ বিল, ডিস লাইনের বিল, ইন্টারনেট বিল, ময়লার বিল, সিকিউরিটি বিল, আনসার বিলসহ নানা অজুহাতে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বকেয়া বিল দাবী করে ফ্ল্যাট মালিকদের কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের চেষ্টা চালানো হয়। চাঁদা না দেয়ায় ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করায় ৫০/৬০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ফ্ল্যাট মালিকদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের মালিকানা সম্পত্তি ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেয়। এসময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরিক্ষা বিভাগের একজন উপ পরিচালকসহ মোট ৫ জন গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে তারা খানপুর হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার পর বৃহস্পতিবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় আবু সাঈদ পাটোয়ারী ও আশরাফ সিদ্দিকী নামে দুই ব্যক্তি ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ সন্ত্রাসী ধরার চেষ্টা করছেন বলে ফতুল্লা থানা পুলিশ জানায়। এছাড়াও রূপায়ন টাউনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কয়েকশ ফ্ল্যাট মালিক স্ত্রী সন্তান ছেলে বুড়ো নিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবী জানায়। এছাড়াও তারা কাউকে কোন চাঁদা দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। কোন সন্ত্রাসীর আস্তানা তাদের মালিকানাধীন রূপায়ন টাউনেও হতে দেবে না। রূপায়নের মদদদাতা গডফাদার নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ পরিচালক আব্দুস সালাম আজাদের স্ত্রী ও মেয়ে বলেন, নাজিম উদ্দিনের সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমার বাবা এখন হাসপাতালে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচার চাই। আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন। সন্ত্রাসীদের বিচার করুন। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। পড়ালেখা করতে চাই।
মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব সারোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের আত্মীয় স্বজনরা এলে বহুবার নিরাপত্তা কর্মী ফোন দিয়ে নিশ্চিত করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়। কিন্তু সন্ত্রাসীদের সঙ্গবদ্ধ দল আনসার ও সিকিউরিটি কর্মী থাকা স্বত্ত্বেও বিনা বাধায় প্রবেশ করে আমাদের ফ্ল্যাটে এসে হামলা চালায়। এরা রূপায়ন কতৃপক্ষের পালিত সন্ত্রাসী। তাদের দিয়ে বিভিন্ন সময়ে আমাদের প্রতিবাদী কন্ঠ রোধ করা হয়। সিসি টিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে প্রতিটি সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানাই।
এসময় বিক্ষোভে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সারোয়ার হোসেন, হারুনুর রশীদ, খাজা আহমেদ, শামীম চৌধুরী, বাকির ভূঁইয়া, নুর আলম, এমএ ছালাম, নুর ইসলাম প্রমুখ।
রূপায়ন টাউনের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা প্রোপার্টিজের ব্যবস্থাপক সারোয়ার হোসেন বলেন, আমার জানা মতে রূপায়ন সন্ত্রাসী পালন করে না। চাঁদাও দাবী করে না। তবে আমার জানার বাইরে কেউ করে থাকলে তা আমি জানি না।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।